বছরের শুরুতেই বাংলাদেশ সরকার সকল প্রকার যানবাহনের রেজিস্ট্রেশন ফি এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স ফি পুনঃনির্ধারণ করে দিয়েছে। BRTA কর্তৃক ইতোমধ্যে পুনঃনির্ধারিত নতুন ড্রাইভিং লাইসেন্স ফি প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশ যানবাহনের ক্যাটাগরের উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন রকমের ড্রাইভিং লাইসেন্স বিআরটিএ কর্তৃক দেয়া হয়ে থাকে। সকল প্রকার ড্রাইভিং লাইসেন্স কে সাধারণত দুই ভাগে ভাগ করা যায়। একটি হচ্ছে পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স এবং আরেকটা হচ্ছে অপেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স।
পেশাদার কিংবা অপেশাদার দুই রকমের ড্রাইভিং লাইসেন্সের ফি বর্ধিত হয়েছে। বর্তমানে অপেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স এর জন্য আপনাকে ৪১৫২ টাকা এবং পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য ২৪২৭ ফ্রি প্রদান করতে হবে। অনেকেই নতুন ড্রাইভিং লাইসেন্স ফি নিয়ে দ্বিধা-দ্বন্দ্বে রয়েছেন। তাই আজকের এই পোস্টে আমি আপনাদের সাথে ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে কত টাকা লাগে এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স এর নতুন ফি কত এ সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানানোর চেষ্টা করব।
ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে কত টাকা লাগে ২০২৪
সকলের একটি কমন প্রশ্ন থাকে যে ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে কত টাকা লাগে। আসলে বিভিন্ন যানবাহনের ধরন এবং লাইসেন্সের ধরনের উপর নির্ভর করে ড্রাইভিং লাইসেন্সের ফি কম বা বেশি হয়ে থাকে। BRTA প্রকাশিত সকল ধরনের যানবাহনের ড্রাইভিং লাইসেন্সের তালিকা টি নিচের অংশে শেয়ার করা হয়েছে। সেখান থেকে আপনি জেনে নিতে পারেন ড্রাইভিং লাইসেন্সের ফি বর্তমানে কত টাকা।
ড্রাইভিং লাইসেন্স নতুন ফি কত?
বিআরটিএ কর্তৃক প্রকাশিত নতুন ড্রাইভিং লাইসেন্সের ফি নির্ধারণ করা হয়েছে। পূর্বের চেয়ে প্রায় ৬০% ফি বর্ধিত করা হয়েছে। সকল প্রকার ড্রাইভিং লাইসেন্স ফি এর সাথে ১৫% ভাট সংযুক্ত আছে। আপনি কি জানেন বর্তমানে নতুন ড্রাইভিং লাইসেন্স এর ফি কত?
বছরের শুরুতেই অপেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স এর ফি ১৬১০ টাকা বাড়িয়ে তা ৪১৫২ টাকা করা হয়েছে, যা পূর্বে ছিল মাত্র ২৫৪২ টাকা। অপরদিকে পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্সের ফি ৭৪৮ টাকা বাড়িয়ে তা ২৪২৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে, যা পূর্বে ছিল ১৬৭৯।
শুধুমাত্র যে ড্রাইভিং লাইসেন্স এর ফি বর্ধিত করা হয়েছে এরকমটি নয়, ড্রাইভিং লাইসেন্সের পাশাপাশি নতুন গাড়ির রেজিস্ট্রেশন ফিও অনেকাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে নতুন মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রে ১২২৬৭ টাকা প্রদান করতে হবে, যা পূর্বে ছিল ১০১৫২ টাকা এবং বর্তমানে তা ২১১৫ টাকা বাড়িয়ে এই ফি নির্ধারণ করা হয়েছে। এই রেজিস্ট্রেশনটি পরবর্তী দুই বছরের জন্য প্রযোজ্য হবে।
মোটরসাইকেল ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে কত টাকা লাগে
মোটরসাইকেলের জন্য সাধারণত অপেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স করা হয়ে থাকে। অনেকেই জানতে চায় যে মোটরসাইকেল ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে কত টাকা লাগে। ২০২৪ সালের শুরুতেই বিআরটিএ কর্তৃক সকল প্রকার ড্রাইভিং লাইসেন্স এবং যানবাহন রেজিস্ট্রেশনের ফি বর্ধিত করেছে। বর্তমানে মোটরসাইকেলের জন্য লাইসেন্স করতে গেলে বেশকিছু ফ্রী প্রদান করতে হয়।
পূর্বে মোটরসাইকেল এর লাইসেন্সের জন্য সর্বমোট ২৫৪২ টাকা ফি প্রদান করতে হতো। কিন্তু বর্তমানে এই ফিস অনেকটি বেড়ে গিয়েছে। বর্তমানে মোটরসাইকেল ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য ১৬১০ টাকা বাড়িয়ে তার সর্বমোট ৪১৫২ টাকা করা হয়েছে। এটি হচ্ছে আপনার ড্রাইভিং লাইসেন্সের বর্ধিত ফি। কিন্তু এর বাহিরেও আপনাকে রেজিস্ট্রেশন ফর্ম বাবদ এবং ভ্যাট বাবদ আরো কিছু টাকা প্রদান করা লাগতে পারে।
ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে কি কি লাগে
আপনি যদি ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে ইচ্ছুক হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনাকে কিছু ডকুমেন্ট জমা দিতে হবে। নিচে ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে কি কি লাগে তার একটি তালিকা শেয়ার করা হয়েছে। ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার জন্য অবশ্যই আপনাকে এ সকল ডকুমেন্টগুলো আপনার সাথে রাখতে হবে।
১. নির্ধারিত ফরমে আবেদন।
২. রেজিস্টার্ড ডাক্তার কর্তৃক মেডিকেল সার্টিফিকেট।
৩. ন্যাশনাল আইডি কার্ডের সত্যায়িত ফটোকপি।
৪. নির্ধারিত ফি (পেশাদার- ২৪২৭ /- ও অপেশাদার- ৪১৫২ /- টাকা) বিআরটিএর নির্ধারিত ব্যাংকে জমাদানের রশিদ।
৫. পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য পুলিশি তদন্ত প্রতিবেদন।
৬. সদ্য তোলা ১ কপি পাসপোর্ট সাইজ ছবি।
ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়ন ফি ২০২৪
অনেকেই জানতে চায় ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়ন ফি কত। আমরা জানি যে ইতোমধ্যে ২০২৪ সালে ড্রাইভিং লাইসেন্স এর ফি বাড়ানো হয়েছে। এর সাথে সাথে লাইসেন্সের নবায়ন ফিও বৃদ্ধি পেয়েছে। যেহেতু বাংলাদেশে দুই ধরনের ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়া যায় সুতরাং উভয়ের জন্যই নবায়ন ফি উভয় ধরনের।
(ক) অপেশাদারঃ
গ্রাহককে প্রথমে নির্ধারিত ফি ( মেয়াদোত্তীর্ণের ১৫ দিনের মধ্যে হলে ৪১৫২/- টাকা ও মেয়াদোত্তীর্ণের ১৫ দিন পরে প্রতি বছর ২০০/- টাকা জরিমানাসহ) জমা দিয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ বিআরটিএর নির্দিষ্ট সার্কেল অফিসে আবেদন করতে হবে। আবেদনপত্র ও সংযুক্ত কাগজপত্র সঠিক পাওয়া গেলে একইদিনে গ্রাহকের বায়োমেট্রিক্স (ডিজিটাল ছবি, ডিজিটাল স্বাক্ষর ও আঙ্গুলের ছাপ) গ্রহণ করা হয়। স্মার্ট কার্ড wপ্রন্টিং সম্পন্ন হলে গ্রাহককে এসএমএস এর মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হয়।
(খ) পেশাদারঃ
পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্সধারীদেরকে পুনরায় একটি ব্যবহারিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে। পরীক্ষায় উত্ত্তীর্ণ হওয়ার পর নির্ধারিত ফি ( মেয়াদোত্তীর্ণের ১৫ দিনের মধ্যে হলে ২৪২৭/- টাকা ও মেয়াদোত্তীর্ণের ১৫ দিন পরে প্রতি বছর ২০০/- টাকা জরিমানাসহ ) জমা দিয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ বিআরটিএর নির্দিষ্ট সার্কেল অফিসে আবেদন করতে হবে। গ্রাহকের বায়োমেট্রিক্স (ডিজিটাল ছবি, ডিজিটাল স্বাক্ষর ও আঙ্গুলের ছাপ) গ্রহণের জন্য গ্রাহককে নির্দিষ্ট সার্কেল অফিসে উপস্থিত হতে হয়। স্মার্ট কার্ড wপ্রন্টিং-এর সমস্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে গ্রাহককে এসএমএস এর মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হয়।
সর্বশেষ কথা
ড্রাইভিং লাইসেন্স সকল চালকদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ জিনিস। আপনার যদি যেকোনো ধরনের মোটরবাইক বা যানবাহন থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই ড্রাইভিং শিখে এবং বিআরটিএ কর্তৃক একটি ড্রাইভিং লাইসেন্স নিয়ে তারপর আপনার ড্রাইভিং করুন। আজকের এই পোস্টে আমি আপনাদের সাথে বিভিন্ন প্রকার ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে কত টাকা লাগে এবং ড্রাইভিং লাইসেন্সের নতুন ফি কত এ সম্পর্কে জানানোর চেষ্টা করেছি। আশা করি আপনি ২০২৪ সালের ড্রাইভিং লাইসেন্সের নতুন ফি কত তা জানতে পেরেছেন।