বিভিন্ন পণ্যের দাম বৃদ্ধি হওয়ার পাশাপাশি চিনির দাম আকাশচুম্বী বেড়ে গেছে। জানা গিয়েছে যে চিনির সংকট দেখা দিয়েছে বাংলাদেশে। আর এই জন্যই আজকের চিনির দাম বাংলাদেশে অত্যাধিক ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে বাংলাদেশের জ্বালানি তেলের বৃদ্ধি হওয়ার পর থেকে সকল পণ্যের দাম হাওয়ার গতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে। যা এখন পর্যন্ত চিনির দাম বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি অনেক পণ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়ে যাচ্ছে। যেটা বাংলাদেশের জনগণের জন্য অনেক হয়রানিমূলক। এ দাম বৃদ্ধির পেছনে রয়েছে নানা কারণ। এসব পণ্যের দাম বৃদ্ধির প্রধান কারন হচ্ছে চিনি সরবরাহের মিলমালিকরা। এরাই দেশে চিনি সংকট দেখিয়ে চিনির দাম বৃদ্ধি করার পাঁয়তারা করেছে। এখন পর্যন্ত বৃদ্ধি হওয়া চিনির দাম বহাল রয়েছে।
১ কেজি খোলা চিনির দাম 120 টাকা এবং প্যাকেটজাত ১ কেজি চিনি 130 টাকা। যা বর্তমান বাজারে এখন চিনির দাম প্রতি কেজিতে 10 থেকে 15 টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। যা মাস খানেক আগেই প্রতি কেজি দাম ছিল 90 থেকে 95 টাকা সরকার ঘোষিত। বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত চিনি ও ডলারের মূল্যবৃদ্ধির কারণে, আগে থেকেই চিনির দাম বাড়ছিল। তবে দুই সপ্তাহ আগে থেকে সরবরাহে ঘাটতি শুরু হয়।
আর এই সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাবে, বাজারে এখন চিনি বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১১৫ টাকায় প্রতি কেজি। এক সপ্তাহে দাম বেড়েছে কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা। খুচরা বিক্রেতাদের দোকানে প্রতি কেজিতে 115 থেকে 120 টাকা করে বিক্রি করা হচ্ছে। যা সাধারণ জনগণের জন্য স্বাভাবিকের জন্য অনেকটাই অস্বস্তিকর। আর আজকের চিনির দাম এই আর্টিকেল থেকেই জানতে পারবেন। আরো জানতে পারবেন লাল চিনির দাম, সাদা চিনির দাম, ফ্রেশ চিনির দাম,পাইকারি চিনির দাম, 1 কেজি চিনির দাম কত ,চিনির পাইকারি বাজার কোথায় ইত্যাদি।সঠিক মূল্য জানতে সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ে দেখুন।
১ কেজি চিনির দাম কত
বর্তমানে প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে 120 টাকা এবং প্যাকেট বিক্রি হচ্ছে 130 টাকা। কিন্তু বিভিন্ন দোকানে এর দাম আরো অনেক বেশি। বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশন এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক ও দেশীয় বাজার মূল্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে প্রতি কেজি দেশি চিনির সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য 100 টাকা থেকে বাড়িয়ে 120 টাকা করা হয়েছে। কিন্তু বর্তমান বাজারে প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে 115 থেকে 120 টাকা এবং প্যাকেট বিক্রি হচ্ছে 130 থেকে 135 টাকা কেজি । আবার কিছু প্যাকেট রয়েছে 140 থেকে 145 টাকা কেজি।
আজকে চিনির দাম কত
বাংলাদেশে প্রতি বছর ১৮ থেকে ২০ লাখ টন চিনি প্রয়োজন হয়। এই ১৮ থেকে ২০ লাখ টন চিনির মধ্য থেকে বাংলাদেশে উৎপাদন হয় মাত্র ১ লাখ টন চিনি। আর বাকি চিনি গুলো বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করতে হয়। আর বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের চিনি সংকট দেখা দিয়েছে। যার প্রধান কারণ হচ্ছে বাংলাদেশের চিনি ব্যবসায়ীর মিলমালিকরা। চিনি ব্যবসায়ীরা পরিকল্পনা করে দেশের আমদানিকৃত সকল চিনি আটকে রেখে দেশের মধ্যে সংকটের সৃষ্টি করে।
এর ফলে সারাদেশে ব্যাপক হারে চিনি সংকট দেখা দেয়। আর এই চিনি সংকটকে কাজে লাগিয়ে অসাধু ব্যবসায়ীরা তাদের ইচ্ছেমতো চিনির দাম বৃদ্ধি করে দিচ্ছে। যা মাস খানেক আগেও চিনির মূল্য ছিল ৯০ থেকে ৯৫ টাকা । তার কিছুদিন আগেও চিনির মূল্য বাজারে বিক্রি হত ৮০ টাকা থেকে ৮২ টাকা্। আর এই নভেম্বর থেকে ডিসেম্বর, এখন পর্যন্ত প্রতি কেজি চিনির দাম ১১৫ থেকে ১২০ টাকা করে বিক্রি করা হচ্ছে।
লাল চিনির দাম কত
দেশের মানুষের চাহিদা পূরণের জন্য যে পরিমাণ চিনির দরকার হয় তার মধ্যে 30 হাজার মেট্রিক টন দেশেই উৎপাদন করা হয়। এবং বাকি যে পরিমাণ চিনি তা বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়। বর্তমান বাজারে সাদা চিনি, লাল চিনি ,ফ্রেশ চিনি প্রায় একই দামে বিক্রি হচ্ছে। তবে সাদা চিনি থেকে লাল চিনির গুরুত্ব অনেক বেশি ও পুষ্টি অনেক বেশি।সাদা চিনি থেকে লাল চিনির দাম একটু বেশি হয়। আর দেশে চিনি আমদানি করার পর থেকেই বিভিন্নভাবে অসাধু ব্যবসায়ীরা চিনির দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন।
গত নভেম্বরেও লাল চিনির দাম ছিল 85 টাকা, পরে চিনির দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে প্রায় 14 টাকা। আর এক মাসের ব্যবধানে চিনির দাম বৃদ্ধি পেয়েছিল 20.88 শতাংশ। এবং বাজারে দেশি লাল চিনি প্যাকেট কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৩০-১৩৫ টাকা করে বর্তমানে দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন দোকানে খুচরা বিক্রি হচ্ছে 115 থেকে 120 টাকা পর্যন্ত। যা স্বাভাবিকের থেকে অনেক বেশি দাম রাখা হচ্ছে ক্রেতাদের কাছ থেকে।
সাদা চিনির দাম কত
বাজারে জানাও কোন পণ্যের দামের স্বস্তি নেই। সব পণ্যের দাম জনক হুড়মুড় করে বেড়ে চলেছে। ব্যবসায়ীরা পণ্য মজুদ রাখে নিমিষেই দেশের পণ্যের সংকট তৈরি করছে। এবং তাদের ইচ্ছামত পণ্যের দাম নির্ধারণ করে দিচ্ছে। বাজারে বর্তমান পরিস্থিতিতে তিনি পাওয়া খুব দুষ্কর,অন্যান্য পণ্য পেয়ে গেলেও তিনি পাওয়া যাচ্ছে না। আর যদি পাওয়া যায় তাহলে নির্ধারিত মূল্য থেকে 10 থেকে 15 টাকা বেশি মূল্যে ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করা হচ্ছে।
কিছু অসাধু ব্যবসায়ীরা ডলারের দাম বাড়ছে বলে নানা অজুহাত দেখিয়ে পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। বাজারে কোন মতেই নির্ধারিত দামে বিক্রি চিনি বিক্রি হচ্ছে না। নভেম্বরের পর থেকে খোলা চিনি বিক্রি হওয়ার কথা ছিল 102 টাকা এবং প্যাকেট জাত 108 টাকা কেজি। কিন্তু সাদা চিনি বর্তমান দাম 120 টাকা করে বিক্রি হচ্ছে এবং প্যাকেট বিক্রি হচ্ছে 130 টাকা থেকে 135 টাকা।
ফ্রেশ চিনির দাম কত
চিনি যখন উৎপাদন করা হয় তখন লাল হিসেবে উৎপাদিত হয়। এজন্য লাল চিনিতে সকল ধরনের উপাদান থাকে। তাই সাদা চিনি ও ফ্রেশ চিনির থেকে লাল চিনির গুরুত্ব এবং পুষ্টি অনেক বেশি থাকে। আরে লাল তিনি প্রথম অবস্থায় অপরিচিত থাকে এজন্য লাল দেখায়। পরবর্তীতে যখন এ লাল চিনিকে পরিশোধিত করা হয় তখন এটি ফ্রেশ ও সাদা চিনিতে রূপান্তরিত হয়। সাদা ও ফ্রেশ চিনির থেকে লাল চিনির পুষ্টি অনেক বেশি । এবং ক্রেতাও অনেক বেশি। আবার অনেকে তার রয়েছেন তিনি পছন্দ করেন। বর্তমান বাজারেও সাদা চিনির মতো ফ্রেশ চিনির দাম বিক্রি হচ্ছে। এই ফ্রেশ চিনি কেজিতে 115 টাকা থেকে 120 টাকা করে বিক্রি করা হচ্ছে।
চিনির পাইকারি দাম কেমন
সরকার ঘোষিত চিনি পাইকারি দাম উল্লেখ করলেও পাইকারি দামে বিক্রি হচ্ছে না। আবার চিনির দাম নির্ধারণ করে দেয় বাংলাদেশ সুগার রিফাইনার্স অ্যাসোসিয়েশন। গত ১৭ নভেম্বর জানিয়ে ঘোষনা দেয় প্রতি কেজি মিল পর্যায়ে চিনির দাম পড়বে 120 টাকা। এবং মিলগেট পর্যায়ে 1 কেজি চিনির প্যাকেট এর দাম পড়বে 130 টাকা। টিসিবির বাজারদরের প্রতিবেদন অনুযায়ী গত নভেম্বরে প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হয়েছে 105 টাকা থেকে 115 টাকা যার একমাস আগেও ছিল 90 থেকে 92 টাকা।
শেষ কথা
আজকে চিনির দাম কত বা আজকে ১ কেজি চিনি কত টাকায় বিক্রি হচ্ছে টা নিয়ে লিখিত সম্পূর্ণ পোষ্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আমি আপনাদের জন্য বিভিন্ন জায়গা থেকে নির্ভুলভাবে তথ্য গুলো সংগ্রহ করার চেষ্টা করেছি। আশাকরি এখান থেকে আপনি চিনির সঠিক মূল্য জানতে পারবেন এবং চিনির বর্তমান বাজারের অবস্থাও জানতে পারবেন। যদি কোন কিছু ভুল হয়ে থাকে তাহলে দয়া করে নিচের কমেন্ট বক্সে অবশ্যই জানিয়ে দেবেন। ধন্যবাদ